গোটা বিশেক প্রাসাদ, ৭০০ গাড়ি, ৫৮ বিমান, ইয়ট! অবাক করবে বিশ্বের ‘সবচেয়ে’ ধনী রাজনীতিবিদের সম্পত্তি
1 min read

গোটা বিশেক প্রাসাদ, ৭০০ গাড়ি, ৫৮ বিমান, ইয়ট! অবাক করবে বিশ্বের ‘সবচেয়ে’ ধনী রাজনীতিবিদের সম্পত্তি

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী রাজনৈতিক ব্যক্তি কে? তা নিয়ে জল্পনা এবং গুজব দীর্ঘ দিনের। প্রায়শই অমুক রাজনীতিবিদ সবচেয়ে বিত্তশালী, তমুক রাজনীতিবিদের সম্পত্তির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বলে হিসাব উঠে আসে বিভিন্ন সমীক্ষায়।

সে রকমই এক সূত্র জানাচ্ছে বিশ্বের ‘সবচেয়ে’ ধনী রাজনীতিবিদ, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বেতন বাবদ পুতিনের বার্ষিক আয় এক লক্ষ ৪০ হাজার ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা)।

খাতায়-কলমে পুতিনের সম্পত্তি বলতে একটি ৮০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্ট, একটি ট্রেলার (বড় ট্রাক) এবং তিনটি গাড়ি।

কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুতিনের মোট সম্পত্তির পরিমাণ আকাশছোঁয়া। জীবনযাপনও বিলাসবহুল। পুতিনের সম্পত্তি নিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে বহু গুজবও।

ফোর্বস-এর ‘মোস্ট পাওয়ারফুল পিপল’-এর তালিকায় নাম রয়েছে পুতিনের। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিজের সম্পত্তির পরিমাণ অনেক কমিয়ে জানালেও পানামানিয়ান ব্যাঙ্কে পুতিনের অ্যাকাউন্ট, তার বিলাসী জীবন ও খরচের বহর জানান দেয়, তার সম্পত্তির পরিমাণ প্রচুর।

রাশিয়ার এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, পুতিনের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ২০ হাজার কোটি ডলার।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার ওই সূত্র ১৯৯০-এর দশকের এক জন খ্যাতনামী বিনিয়োগকারী। তার দাবির পরে পুতিনের সম্পত্তি নিয়ে বহু দিন ধরে থাকা রহস্য আরও গভীর হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুতিনের সমস্ত সম্পত্তির মধ্যে সব থেকে মূল্যবান কৃষ্ণসাগরের তটে এবং পাহাড়ের কোলে থাকা একটি প্রাসাদ। সেই প্রাসাদ পরিচিত ‘পুতিন’স কান্ট্রি কটেজ’ নামে।

১৭ হাজার ৬৯১ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে প্রাসাদটি। ক্যাসিনো, আঙুরের খেত থেকে শুরু করে গির্জা, এমনকি নিজস্ব বন্দরও রয়েছে প্রাসাদে। যেন একটি আলাদা শহর এই প্রাসাদ।

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রিক দেবতাদের মূর্তিতে সজ্জিত ওই প্রাসাদের অন্দরে একটি মার্বেল সুইমিং পুল, একটি অ্যাম্ফিথিয়েটার, একটি অত্যাধুনিক বরফ-হকি খেলার ময়দান, একটি ক্যাসিনো এবং এমনকি নৈশক্লাব রয়েছে।

পুতিনের প্রাসাদের অন্দরে যে আসবাবপত্র রয়েছে, তার মূল্যই নাকি ৫০ লক্ষ ডলার। যার মধ্যে শুধুমাত্র মদ্যপানের জন্য একটি ৫৪ হাজার ডলারের টেবিল রাখা রয়েছে।

প্রাসাদের ভিতরে যে শৌচাগারগুলি রয়েছে, সেগুলিও নামীদামি জিনিসপত্রে ভর্তি। শৌচাগার পরিষ্কার রাখার জন্য যে ব্রাশ ব্যবহার করা হয়, সেটির দামই নাকি লাখ টাকার কাছাকাছি।

ইটালি থেকে আনানো ওই ব্রাশ ছাড়াও মহার্ঘ সাবান, তেল, শ্যাম্পু, সুগন্ধিও রয়েছে শৌচাগারগুলির ভিতরে।

চোখ ধাঁধানো কারুকার্য এবং আসবাবে ঠাসা ওই রাজকীয় প্রাসাদের মেঝে তৈরি হয়েছে ঝলমলে ইটালীয় মার্বেল দিয়ে।

সংবাদমাধ্যম ‘ফরচুন’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই প্রাসাদের গরিমা বজায় রাখতে নাকি ৪০ জন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। যাদের বার্ষিক বেতন ২০ লক্ষ ডলারের বেশি।

তবে ওই প্রাসাদ নিয়ে বিতর্কও রয়েছে বহু। রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সেই নাভালনির দাবি ঘুষের টাকায় তৈরি এই প্রাসাদ তৈরি হয়েছে। তার পরই তেতে উঠেছিল সারা দেশ।

নাভালনির দাবি, রাশিয়ার ক্রাসনোদরের কাছে গেলেন্দঝিক নামে শহরে রয়েছে সেই প্রাসাদ। যা তৈরিতে খরচ হয়েছে ১৩৫ কোটি ডলার। তার আরো দাবি, পুতিনের ঘনিষ্ঠ লোকজন ঘুষের টাকা দিয়ে পুতিনের জন্য এই প্রাসাদ বানিয়ে দিয়েছেন। পুতিনই নাকি এই প্রাসাদের একমাত্র মালিক।

গত ১৫ বছর ধরে তৈরি হয়েছে প্রাসাদটি। এই প্রাসাদের উপর দিয়ে কোনো বিমান যাতায়াতের অনুমতি নেই। এমনকি যে কোনো জলযানকে নাকি প্রাসাদ থেকে অন্তত ৮ কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে পড়তে হবে। এমনটাই দাবি নাভালনির।

অনেকেই সেই রাজপ্রাসাদ পুতিনের বলে দাবি করলেও, ক্রেমলিনের তরফে সেই দাবির সত্যতা স্বীকার করা হয়নি। ক্রেমলিনের দাবি, পুতিন কেন তার কোনো নিকট বা দূরের আত্মীয়ের সঙ্গেও ওই প্রাসাদের সম্পর্ক নেই।

শোনা যায়, পুতিনের সম্পত্তির তালিকায় ওই প্রাসাদ ছাড়়া আরও ১৯টি বাড়ি রয়েছে।

এ ছাড়াও নাকি রয়েছে ৭০০টি গাড়ি, ৫৮টি বিমান ও হেলিকপ্টার এবং প্রায় ৭২ কোটি টাকা মূল্যের একটি বিলাসবহুল বিমান। জল্পনা রয়েছে, ওই বিমানটি ‘দ্য ফ্লাইং ক্রেমলিন’ নামেও পরিচিত।

পুতিনের কাছে একটি বিলাসবহুল জলযান রয়েছে বলেও শোনা যায়। ‘দ্য শেহরাজাদে’ নামে পুতিনের ওই বিলাসবহুল ইয়টের দাম নাকি ৭০ কোটি টাকা।

পুতিনের ঘড়ির সংগ্রহও নজর কাড়ার মতো। পুতিনের ঘড়ির সংগ্রহশালায় ৫০ লক্ষ ডলারের একটি ঘড়ি রয়েছে বলেও শোনা যায়। হিসাব বলছে, শুধু সেই ঘড়িটির দামই পুতিনের বার্ষিক বেতনের কয়েক গুণ।

কিন্তু সত্যিই কী পুতিনের এত সম্পত্তি রয়েছে? থাকলেও তা কোথা থেকে এল? রাশিয়ার একনায়ককে নিয়ে থাকা বহু ধোঁয়াশার মতো এ-ও এক রহস্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *